পৃথিবীতে অনেক ঘটনা হয়তো আছে যার ব্যাখ্যা জানা যায়নি এখনো। তবে সত্যি সত্যি তা ঘটায় এর বাস্তবতাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এমন অনেক ঘটনা আছে যার ব্যাখ্যা না জানলেও প্রতিনিয়ত দেখতে দেখতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি।
বিজ্ঞান এখনো বিষয়গুলো নিয়ে গবেষণা করছে। কখনো সত্যের দেখা না পেলেও আলোর দিশা পাচ্ছেন। সেই আলোর নিশানা থেকে বিজ্ঞানীরা ধারনা করছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রাণীজগতের অভিবাসন। আমাদের দেশেই প্রতিবছর শীতকালে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে পাখি আসে। স্বল্প সময়ের জন্য বহু দূর থেকে পথ চিনে তারা আসে। আবার চলেও যায়। কেন তারা আসে, কীভাবে এতো দূর পথ চিনে আসে, নির্দিষ্ট কাল পর আবার একইপথে কীভাবে ফেরত যায়, কেনই বা যায় এর সঠিক উত্তর আমরা আজো জানি না। একই প্রক্রিয়ায় বিশ্বে প্রতি বছর বহু পশুপাখি সাময়িক মাইগ্রেট হয়। বরাবর দেখে আসছি বলে বিষয়টি আমাদের কাছে এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
প্রাণীদের বৃষ্টি
বৃষ্টিতে পানি পড়বে এটাই স্বাভাবিক। পানির পরিবর্তে বরফ পড়াও মেনে নেয়া যায়। তবে পানির বদলে মাছ কিংবা ব্যাঙ পড়া কী মানা সম্ভব? ইথিওপিয়াতে ২০০০ সালে মাছ বৃষ্টি হয়। সেদিন আকাশ থেকে টন টন মাছ মাটিতে পড়ে। যার বেশিরভাগ জীবিত ছিল। মজার ব্যাপার হচ্ছে মাটিতে পড়া সব মাছ একই প্রজাতির ছিল। শুধু ইথিওপিয়া নয়, ১৮৬১ সালে সিঙ্গাপুরেও মাছ বৃষ্টি হয়েছিল। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কাতেও মাছ বৃষ্টির খবর পাওয়া যায়। আবার ২০০৯ সালে জাপানে হয় ব্যাঙ বৃষ্টি। এর কারণ হিসাবে বিজ্ঞানীদের ধারনা, টর্নেডোর মতো মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ের ফলে এসব প্রাণী প্রবল বাতাসে উপরে চলে আসে। পরে অন্য স্থানে সেগুলো বৃষ্টির সাথে মাটিতে পড়ে। তবে বৃষ্টির প্রাণীগুলো কেন একই জাতের হয়, এই ব্যাখ্যা এখনো বিজ্ঞানীদের কাছে নেই।
জেলি ফিস লেক
পালাউ’র লেক আইল্যান্ডে জেলি ফিস হ্রদ নিয়ে রহস্য আছে। যার বৈজ্ঞানিক সমাধান এখনো মেলেনি। প্রায় ১২ হাজার বছর পুরনো প্রাকৃতিক হ্রদটিতে সোনালী ও সাদা জেলিফিস দেখা যায়। জেলিফিসগুলি ঐ লেকেই থাকে। এরা প্রতিদিন লেকের ভেতরে সূর্যের আলো পেতে লেকের এক পাশ থেকে অন্য পাশে যাতায়াত করে। সূর্যের আলো যাতে বেশি পাওয়া যায়। মজার বিষয় হচ্ছে, হঠাৎ করেই ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত জেলিফিসগুলো লেক থেকে হারিয়ে যায়। প্রচুর পর্যটক এই দ্বীপে নিয়মিত যেতেন জেলিফিস দেখার জন্য। এভাবে হঠাৎ জেলিফিসগুলো হারিয়ে যাওয়ায় বিষয়টা সবার নজরে আসে। কর্তৃপক্ষ এবং সরকার যখন আশা একেবারে ছেড়েই দিয়েছে তখন হঠাৎ করেই সেগুলো আবার লেকটিতে দেখা মেলে। একটি দুটি করে আবারো আগের সংখ্যায় ফিরে আসে। ঠিক আগে যেমনটি ছিল তেমনটি। কিন্তু কেন তাদের এই হারিয়ে যাওয়া এবং ফের তাদের উদয়ই বা কীভাবে এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আজো মেলেনি। অবশ্য কোন কোন বিজ্ঞানীর মতে, ঐ দুই বছর হ্রদে এল নিনোর প্রভাবে পানির তাপ বেড়ে যাওয়ায় জেলিফিসের শরীরে যে পরিমাণ এলজি থাকে তা কমে যায়। ফলে অনেক জেলিফিস মারা যায়। দু’বছর বাদে তাপমাত্রা স্বাভাবিক হয়ে এলে জেলিফিসগুলো আগের সংখ্যায় ফিরে আসে।